আল্লাহর অলি না শয়তানের অলি ?

অলি দুই প্রকার
১ / আল্লাহর অলি
২ / শয়তানের অলি 

১ / আল্লাহর অলি 
রহমানের আল্লাহর অলী ? তারা হচ্ছে ঐ সমস্ত মুমিন মুত্তাকীগণ যারা সর্বাবস্থায়ই আল্লাহকেই ভয় করে এবং (আক্বীদাহ আমলে )আল্লাহর কিতাব ও রাসুলের সুন্নতকে আকড়ে ধরে । আল্লাহ বলেন , (৬২/৬৩) শোনো, যারা আল্লাহর অলী, ঈমান এনেছে এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করেছে ,তাদের কোন ভয় ও মর্ম যাতনার অবকাশ নেই ) তারাই আল্লাহ অলী । রাসুল সাঃ বলেন إنما ولي الله و صالع المومنين নিশ্চয়ই আমার বন্ধু হচ্ছে আল্লাহ এবং নেক মুমিনগণ (বুখারী ও মুসলিম )

২ / শয়তানের অলি 
শয়তানের অলী কারা ? তারা হল আল্লাহর বিরোদিতা কারী তারা কুর'আন ও সুন্না অনুসরন করা জরুরী মনে করেনা , এবং বিদ'আত ও নাফসানিয়াত অনুযায়ী চলে । আল্লাহ ছাড়া গায়রুল্লাহর নিকট দু'আ করে আর যত অলী আওলিয়ার নামে কিচ্ছা কাহিনী বেয়ান করে ।
আল্লাহ তা'আলা বলেন ,( (যুখরুফ৩৬/৩৭ ) যে ব্যক্তি রহমানের স্মরণ থেকে গাফিল থাকে আমি তার ওপর এক শয়তান চাপিয়ে দেই, সে তার বন্ধু হয়ে যায়৷, এ শয়তানরা এসব লোকদেরকে সঠিক পথে আসতে বাধা দেয়, কিন্তু এরা মনে করে আমরা ঠিক পথেই চলছি৷ ) /এরাই হচ্ছে শয়তানের অলী যাদের তোমরা অলী মনেকর ।

আল্লাহ  বলেন, আশ-শুআরা ২২১/২২২)  هَلْ أُنَبِّئُكُمْ عَلَىٰ مَن تَنَزَّلُ الشَّيَاطِينُ হে লোকেরা! আমি তোমাদের জানাবো শয়তানরা কার উপর অবতীর্ণ হয় ?تَنَزَّلُ عَلَىٰ كُلِّ أَفَّاكٍ أَثِيمٍ তারা তো প্রত্যেক জালিয়াত বদকারের উপর অবতীর্ণ হয়৷
এখানে গণৎকার , জ্যোতিষী , ভবিষ্যত বক্তা ,"আমলকারী" ভন্ড পীর ,ইত্যাদি লোক , যারা ভবিষ্যতের খবর জানে বলে ভণ্ড প্রতারকের অভিনয় করে  


 আল্লাহ আরো বলেন ২২৩) يُلْقُونَ السَّمْعَ وَأَكْثَرُهُمْ كَاذِبُونَ শোনা কথা কানে ঢুকিয়ে দেয় এবং এর বেশির ভাগই হয় মিথ্যা৷

এর দু'টি অর্থ হতে পারে৷ একটি হচ্ছে , শয়তানরা কিছু শুনেটুনে নিয়ে নিজেদের চেলাদেরকে জানিয়ে দেয় এবং তাতে সামান্যতম সত্যের সাথে বিপুল পরিমাণ মিথ্যার মিশ্রণ ঘটায় ৷ দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে (,ভন্ড পীর) যারা আল্লাহর অলি বলে দাবি করে তারা ! মির্থুক-প্রতারক গণৎকাররা শয়তানের কাছ থেকে কিছু শুনে নেয় এবং তারপর তার সাথে নিজের পক্ষ থেকে অনেকটা মিথ্যা মিশিয়ে মানুষের কানে ফুঁকে দিতে থাকে৷ একটি হাদীসে এর আলোচনা এসেছে৷ হাদীসটি বুখারী শরীফে আয়েশার (রা) বর্ণনায় উদ্ধৃত হয়েছে৷ তাতে আয়েশা (রা) বলেনঃ কোন কোন লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে গণকদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে৷ জবাবে তিনি বলেন ,ওসব কিছুই নয়৷ তারা বলে , হে আল্লাহর রসূল ! কখনো কখনো তারা তো আবার ঠিক সত্যি কথাই বলে দেয়৷ রসূলুল্লাহ (সা) বলেন, সত্যি কথাটা কখনো কখনো জিনেরা নিয়ে আসে এবং তাদের বন্ধুদের কানে ফুঁকে দেয় তারপর তারা তার সাথে নানা রকম মিথ্যার মিশ্রণ ঘটিয়ে একটি কাহিনী তৈরী করে৷

এমন একটি কাহিনী - যেমনটি করেছে ফাজায়েলে আমলে বর্ননা করে .


তাবলীগি নেসাব ফাযায়েলে আমাল নামক বইয়ের মধ্যে কাশফএর একধিক ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। পাঠকদের জন্য আমরা এখানে মাত্র একটি ঘটনা উল্লেখ করছি।
শায়খ আবু ইয়াজিদ কুরতুবী (রঃ) বলেনঃ আমি শুনিয়াছি, যে ব্যক্তি সত্তর হাজার বার লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পড়ে সে দোযখের আগুন হইতে নাজাত পাইয়া যায়। আমি এই খবর শুনিয়া এক নেছাব অর্থাৎ সত্তর হাজার বার আমার স্ত্রীর জন্য পড়িলাম এবং কয়েক নেছাব আমার নিজের জন্য পড়িয়া আখেরাতের সম্বল করিয়া রাখিলাম। আমাদের নিকট এক যুবক থাকিত। তাহার সম্বন্ধে প্রসিদ্ধ ছিল যে, তাহার কাশ্ফ হয় এবং জান্নাত-জাহান্নামও সে দেখিতে পায়। ইহার সত্যতার ব্যাপারে আমার কিছুটা সন্দেহ ছিল। একবার সেই যুবক আমাদের সহিত খাওয়া-দাওয়ায় শরীক ছিল। এমতাবস্থায় হঠাৎ সে চিৎকার দিয়া উঠিল এবং তাহার শ্বাস বন্ধ হইয়া যাওয়ার উপক্রম হইল এবং সে বলিলঃ আমার মা দোযখে জ্বলিতেছে, আমি তাহার অবস্থা দেখিতে পাইয়াছি। কুরতুবী (রহঃ) বলেনঃ আমি তাহার অস্থির অবস্থা লক্ষ করিতেছিলাম। আমার খেয়াল হইল যে, একটি নেছাব তাহার মার জন্য বখশিয়া দেই। যাহা দ্বারা তাহার সত্যতার ব্যাপারেও আমার পরীক্ষা হইয়া যাইবে। অর্থাৎ তাহার কাশ্ফ হওয়ার ব্যাপারটাও পরীক্ষা হইয়া যাইবে। সুতরাং আমার জন্য পড়া সত্তর হাজারের নেছাবসমূহ হইতে একটি নেছাব তাহার মার জন্য বখশিয়া দিলাম। আমি আমার অন্তরে ইহা গোপন রাখিয়াছিলাম। কিন্তু ঐ যুবক তৎক্ষনাৎ বলতে লাগিল চাচা! আমার মা দোযখের আগুন হইতে রক্ষা পাইয়া গিয়াছে।
দেখুনঃ ফাযায়েলে আমাল, ১ম খন্ড, ১৩৫ পৃষ্ঠা, প্রথম প্রকাশ, অক্টোবর-২০০১ ইং। দারুল কিতাব, ৫০ বাংলা বাজার ঢাকা-১১০০ থেকে প্রকাশিত)
এমনি আরও অনেক শির্কী ও বিদআতী কথা ফাযায়েলে আমল বইটিতে রয়েছে, যা সচেতন পাঠক একটু খেয়াল করে বইটি পড়লে সহজেই ধরতে পারবেন।
প্রিয় পাঠক ভাই ও বন্ধুগণ! জান্নাত ও জাহান্নামের ব্যাপারে আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাতে যেটুকু কলা হয়েছে, তা ব্যতীত অন্য কোন খবর জানার কোন উপায় নেই। কারণ এগুলো গায়েবী বিষয়। আল্লাহ্ তাআলা আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাধ্যমে আমাদেরকে যেটুকু বলেছেন, আমরা শুধু সেটুকুই জানি। সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি এর অতিরিক্ত কিছু দাবী করে, তাহলে সে মিথ্যাবাদী। তা বিশ্বাস করা সুস্পষ্ট শির্ক। আল্লাহ্ তাআলা বলেনঃ
قُلْ لَا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ وَلَوْ كُنْتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لَاسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ إِنْ أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
হে নবী! আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ্ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম। ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধু একজন ভীতিপ্রদর্শক ও সুসংবাদাতা ঈমানদারদের জন্য। (সূরা আ’রাফঃ ১৮৮) আল্লাহ তাআলা বলেনঃ
قُلْ لَا أَقُولُ لَكُمْ عِنْدِي خَزَائِنُ اللَّهِ وَلَا أَعْلَمُ الْغَيْبَ
আপনি বলুন: আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহ্র ভাণ্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। (সূরা আনআমঃ ৫০)
عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَى غَيْبِهِ أَحَدًا إِلَّا مَنِ ارْتَضَى مِنْ رَسُولٍ
“তিনি (আল্লা) গায়েব সম্পর্কে অবগত। তিনি গায়েবের বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না। তবে তাঁর মনোনীত কোন রসূল ব্যতীত। (সূরা জিনঃ ২৬-২৭)   হায়  কুরআন কি বলে আর আমাদের  সুফীবাদীরা কি বলে .


আর কবি দের ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা বলেই দিয়েছেন,  26-২২৪/২২৫)وَالشُّعَرَاءُ يَتَّبِعُهُمُ الْغَاوُونَ  আর কবিরা! তাদের পেছনে চলে পথভ্রান্ত যারা৷,  أَلَمْ تَرَ أَنَّهُمْ فِي كُلِّ وَادٍ يَهِيمُونَতুমি কি দেখ না তারা উপতক্যায় উপত্যকায় উদভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ায়,